1. coxsbazarekattorbd@gmail.com : Cox's Bazar Ekattor : Cox's Bazar Ekattor
  2. coxsekttornews@gmail.com : Balal Uddin : Balal Uddin
স্বাধীনতার সংগ্রামে ওলামায়ে কেরামগণের ভূমিকা - Cox's Bazar Ekattor | দৈনিক কক্সবাজার একাত্তর
বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ১০:৫৯ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ :
১০ ও ১১ মে দুই দিনব্যাপী কক্সবাজারে বলী খেলা ও বৈশাখী মেলা : অংশ নিচ্ছে ৩০০জন বলী সদর উপজেলা নির্বাচনে হাড্ডা হাড্ডি লড়াই হবে হেভিওয়েট দুই প্রার্থীর : বিজয়ের পথে নুরুল আবছার কেন্দ্রে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ আনারস প্রতীকের বিরুদ্ধে মোটর সাইকেল প্রার্থী নুরুল আবছারের কক্সবাজারে পাহাড়ি ছড়ায় গোসলে নেমে দুই শিশুর মৃত্যু মেরিন ড্রাইভ প্রশস্তকরণ প্রকল্পে কাটা পড়বে সাড়ে ৬ হাজার গাছ মিল্টনের আশ্রমে থাকা ব্যক্তিদের দেওয়া হয়েছে শামসুল হক ফাউন্ডেশনকে: হারুন কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাচনে মুখোমুখি হেভিওয়েট দুই প্রার্থী : এগিয়ে নুরুল আবছার সম্পদ অর্জনে এগিয়ে মুজিব, বাড়িঘর নেই আবছারের! রাখাইনে বর্ডার গার্ড হেডকোয়ার্টার দখল আরাকান আর্মির কক্সবাজার জেলা কারাগারের বর্তমান চিত্র

স্বাধীনতার সংগ্রামে ওলামায়ে কেরামগণের ভূমিকা

  • আপলোড সময় : শুক্রবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২২
  • ৪৭৮ জন দেখেছেন
মুহাম্মদ তাহের নঈমঃ শিক্ষক, সাংবাদিক:
১৬ ডিসেম্বর আমাদের মহান বিজয় দিবস। স্বাধীনতা মহান আল্লাহ তায়ালার অনুগ্রহ নয় কি? আমরা কি ভেবে দেখেছি, স্বাধীনতা মহান আল্লাহর কত বড়ই নিয়ামত ? কবির ভাষায় “তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা‘ শহরের বুকে জলপাই রঙের ট্যাঙ্ক এলো, দানবের মত চিৎকার করতে করতে… তুমি আসবে ব’লে, হে স্বাধীনতা, অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিলো পিতামাতার লাশের উপর”।
সবুজ-শ্যামলে ঘেরা ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্যদিয়ে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। একাত্তরের ষোল ডিসেম্বর আমাদের এই দেশ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী থেকে মুক্ত হয় এবং বাংলার হৃৎপিন্ডে টকটকে লাল স্বাধীনতার সূর্য উদ্ভাসিত হয়। সবুজ-শ্যামল স্বাধীন দেশ হিসাবে পৃথিবীর মানচিত্রে স্থান পেয়েছে হিজল তমাল, তরুলতা আর সবুজ শ্যামলতায় ঘেরা এবং মেহনতি মানুষের ঘামে ঝরা রূপসী বাংলাদেশ। বিশ্বের দরবারে আমাদের আত্ম পরিচয় ঘটেছে স্বাধীন জাতি হিসাবে। ৭১ এর স্বাধীনতা  প্রতিটি জাতির গৌরব ও বীর বাঙ্গালীর অহঙ্কারের বিষয়।
এদেশের মজলুম জনগণের স্বার্থে স্বাধীনতা সংগ্রামে দেশের অসংখ্য ওলামায়ে কেরাম তাদের জান-মালসহ সর্বশক্তি দিয়ে স্বাধীনতার সংগ্রামে অংশ গ্রহণ করেছেন। এক শ্রেণির বুদ্ধিজীবীরা মনে করেন স্বাধীনতা সংগ্রামে আলেম সমাজের কোনো অবদান নেই। এমনটি মনে করার কোনো অবকাশ নেই। স্বাধীনতা যুদ্ধে আলেমদের অবদান অনস্বীকার্য। অপরদিকে অনেক আলেমও এমন ধারণার শিকার। তাই যে কোনো দাবিতে আমাদের যেমন ঐতিহাসিক জোর নেই, তাদেরর তেমন দাবি পূরণের ইচ্ছা নেই। ফলে আলেম সমাজ স্বদেশে, স্বজাতির মধ্যে থেকেও এক ধরনের বিদেশি ও ভিন্ন জাতির মতো বসবাস করছেন। অথচ বাস্তবতা এমন নয়। আজাদী আন্দোলন, সিপাহী বিপ্লব, ইংরেজ খেদাও আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা আন্দোলনসহ দেশ ও জনগণের স্বার্থে সকল প্রকার সংগ্রামে আলেম সমাজ ছিলেন অগ্রগামী। সবচেয়ে বেশি রক্ত ঝরেছে, লাশ পড়েছে তাদের এবং অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন সমাজের ওলামায়ে কেরামই। সেই ইতিহাস খানিকটা জাতির সামনে সংক্ষিপ্তাকারে এ বিষয়ে আলোকপাত করার চেষ্টা করছি। নিম্মে তার বর্ণনা পেশ করা হলো।
(এক) ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সেই জামেয়া ইসলামিয়া জমিরিয়া কাছেমুল উলুম পটিয়া চট্রগ্রামের ”আমার প্রিয় বিদ্যাপিঠ”পটিয়া মাদ্রাসার অবদানের কথা প্রথম উদাহারন সরুপ পাঠকের সামনে তুলে ধরলাম। অত্র প্রতিষ্ঠানের নাম তো আমরা সবাই শুনেছি।বাংলাদেশের ক্বওমী মাদ্রাসা গুলির মধ্যে আয়তনের দিক থেকে সবচেয়ে বড় মাদ্রাসা হল চট্রগ্রামের জামেয়া ইসলামিয়া  পটিয়া (পটিয়া মাদ্রাসা)  ১৯৭১ সালের এপ্রিল  মাসে মরহুম শহীদ প্রেসিডেন্ট মেজর জিয়াউর রহমান যে এই চট্রগ্রামের পটিয়া মাদ্রাসায়  আশ্রয় নিয়েছিলেন এই তথ্য আমরা কয়জনই জানি? এবং মেজর মেজর জিয়াউর রহমান কে আশ্রয় দেয়ার অপরাধে পটিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক আল্লামা দানেশ রহমাতুল্লাহি আলাইহি কে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীরা হত্যা করে সেই ইহিাস কি আমরা আপনারা জানি ?
সেই সময় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অন্যতম  প্রতিষ্টাতা বেলাল মোহাম্মদ উনার “ স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র” গ্রন্থের ৫৪,৫৫ ও ১০২ পৃষ্ঠায় লিখেছেন – হানাদার বাহিনী যখন এপ্রিল মাসে চট্রগ্রাম শহরে আসল আমরা তখন কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রের ট্রান্সমিটার ও অন্যান্য বেতার যন্ত্রপাতি নিয়ে পটিয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলাম। আমাদের সাথে তখন ছিল মেজর জিয়াউররহমান।
 কর্ণফুলি নদী পার হয়ে পটিয়ার মাটিতে পাঁ দিয়ে মেজর জিয়াউররহমান চিন্তা করছিল কোথায় তিনি আশ্রয় নিবেন। সেই সময় পটিয়া মাদ্রাসার মুহতামিম ছিলেন প্রিন্সিপাল শায়খুল আরব ওয়াল্ আজম্ আল্লামা হাজী ইউনুস রহঃ। উনি সেই সময় হজ্জে গিয়েছিলেন।মুহাদ্দেস আল্লামা দানেশ রহমাতুল্লাহি আলিইহি তখন পটিয়া মাদ্রাসার দায়িত্বে  ছিলেন। উনিই জিয়াউর রহমান কে উনার মাদ্রাসায় আমন্ত্রন জানান। যুদ্ধেরকারনে মাদ্রাসা ছুটি ছিল। মেজর জিয়াউর রহমান ১ সপ্তাহ পটিয়া মাদ্রাসায় ছিলেন। ১ সপ্তাহ পর মেজর জিয়াউর রহমান পটিয়া মাদ্রাসা ত্যাগ করেন।পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী গোয়েন্দা মারফত তথ্য পেয়ে প্রথমে বিশ্বাসই করতে পারেনি যে পটিয়া মাদ্রাসার নায়েবে মুহতামিম মুহাদ্দেস আল্লামা দানেশ (রহ) ও অন্যান্য শিক্ষকরা জিয়াউর রহমানকে আশ্রয় দিয়েছিল।
 কিন্তু যখন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিশ্চিত হয় যে পটিয়া মাদ্রাসার সম্মানিত আলেমরা মুক্তিযুদ্ধ সমর্থনকরেছে, তখনি ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল সেই পটিয়া মাদ্রাসার উপর জঙ্গি বিমান দিয়ে বোমা বর্ষণ করা শুরু করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর এই বোমা বর্ষনে পটিয়া মাদ্রাসার সম্মানিত নায়েবে মুহতামিম ও মুহাদ্দেস আল্লামা দানেশ রহমাতুল্লাহি আলাইহি ও জামেয়ার ক্বারী জেবুল হাসানের একজন মেহমান শহীদ হন এবং আরো অনেক সম্মানিত শিক্ষক গুরুতর আহত হন। মেজর জিয়াউর রহমান প্রায় এই পটিয়া মাদ্রাসার কথা বিশেষ করে আল্লামা দানেশ রহমাতুল্লাহি আলাইহির কথা বলতেন। পটিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ ১৯৭১সালে স্পষ্ট ফতোয়া দিয়েছিলেন যে, আমরা মজলুম আর পাকিস্তানিরা জালেম,মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করা ফরয এই তথ্য এখনকার কয় জনে জানে ? আমরা শুধু জানি যে রাজাকার আল বদর আল-শামস এইসব বাহিনীর লোকেরা ইসলামের নাম ব্যবহার করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কে নিঃশর্ত সমর্থন দিয়েছে, পাকিস্তানি বাহিনীর গনহত্যা কে সমর্থন করেছে। কিন্তু আমাদের দেওবন্দ পন্থী কওমি মাদ্রাসার সম্মানিত আলেমরা যে মুক্তিযুদ্ধ কে সমর্থন করেছিল অনেক আলেম মুক্তিযুদ্ধ করেছিল এই তথ্য প্রায় মানুষের অজানা।    যুগান্তর  পত্রিকার সাবেক সাংবাদিক শাকের হোসাইন শিবলীর একটা অসাধারন বই,নাম হল “ আলেম মুক্তিযোদ্ধার খোজে ”শিরোনামে ৯১২ পৃষ্ঠার  এই বইয়ে তথ্যপ্রমান দিয়ে অনেক আলেমের ১৯৭১ সালে তাদের মুক্তিযুদ্ধের অবদানের কথা তুলে ধরেছেন।অনেক মনিষী উক্ত বইয়ের সহায়তা নিয়েছেন,আমিও কিছু চেষ্টা করছি মাত্র।তিনি গ্রামে গ্রামে ঘুরে শতাধিক আলেম মুক্তিযোদ্ধাকে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে এসেছেন এবং তাদের অনেকের সাক্ষাতকার নিয়েছেন। এ জন্যে আমরা শাকের হোসেইন শিবলির কাছে কৃতজ্ঞ তার এই প্রয়াস কে আমি স্যালুট করি। উল্লেখ্য যে, আলেম মুক্তিযোদ্ধাদের যে তালিকা জনাব শাকের হোছাইন দিয়েছেন, এর বাইরে আরো অনেক হাজারো আলেম মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন, যা ইতিহাসের পাতায় স্থান পায়নি।তবে কেন পায়নি তা বোধগম্য নয়।
এই বইটিতে আপনারা অনেক বড় বড় আলেম যারা দেশের বিভিন্ন ক্বওমী মাদ্রাসা থেকে পাস করেছিলেন মুক্তিযুদ্ধের সময় তাঁদের বীরত্বের কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে। কিন্তু ঐ আলেমরা কিন্তু আওয়ামীলীগ,যুবলীগ বা ছাত্রলীগ করতো না।তারা শুধু দেশ মাতৃকার টানে ও নির্যাতীত নারীদের কে পাকিস্তানী হানদার বাহিনীর লালসার হাত থেকে বাঁচানোর জন্যই মুক্তিযুদ্ধকরেছিলেন।
(দুই) ১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বর কুমিল্লার চান্দিনা থানা যার মাধ্যমে পাক হানাদার বাহিনীর করাল   গ্রাস থেকে মুক্ত হয় ,এবং ১৩৯৫ জন পাক আর্মি আত্মসমর্পন করে তিনি হলেন মাওলানা মুখলেছুর রহমান। বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ থেকে প্রকাশিত মাওলানা মুখলেছুর রহমান এর মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট এর সনদক্রমিক নং ২০২০৬। ১৯৭১ সালে মাওলানা মুখলেছুর রহমান চাদপুরের কচুয়া মাদ্রাসায় তাফসীরে জালালাইন পড়তেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে গেলে তিনি ভারতে পালিয়ে যান।ভারতের উদয়পুরের অদূরে পাটনা ক্যাম্পে ক্যাপ্টেন সুজাতআলীর নেতৃত্বে তারা একসাথে ৯০০ জন ট্রেনিং নেন।ট্রেনিং শেষে তারা ভারতের মিয়ার বাজার সীমান্ত দিয়ে চৌদ্দগ্রাম হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। বাংলাদেশে তাদের মুক্তিযুদ্ধের  অধিনায়ক ছিলেন মেজর হায়দার।
ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা থানা সদর থেকে ৬ কিলোমিটার পশ্চিমে পদুরবাড়ি লেংড়া বাজারের দিকে জয়দা নামক একটি  গ্রাম,  যেই গ্রামে মাওলানা বাড়ির সবাই মুক্তিযুদ্ধা ছিলেন। মাওলানা বাড়ির ছেলে মাওলানা হাবীবুর রহমান চানু যিনি সরাসরী মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন করেছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয় থেকে গেজেটে   প্রকাশিত উনার মুক্তিযুদ্ধার সনদ নং ১০০৯,মাওলানা হাবীবুর রহমান চানু বর্তমানে মুক্তাগাছা থানা বাংলাদেশমুক্তিযোদ্ধা সংসদের থানা কমিটিতে আছেন। উনি ময়মনসিংহ সদরের চড়পাড়া ক্বওমী মাদ্রাসা থেকে দাওরা হাদিস পাস করা। মাওলানা বাড়ির জামাই হাফেজ মোহাম্মদ মহিউদ্দীন আহমদ ভারতীয় ট্রেনিংপ্রাপ্ত মুক্তিযুদ্ধা। তার মুক্তিযুদ্ধা নং ৯৫২। মুক্তাগাছার জয়দা গ্রামের মাওলানা বাড়ি ১৯৭১ সালে অনেক হিন্দু পরিবার কে আশ্রয়দিয়েছিল।
মুক্তাগাছা থানার সকল হিন্দুরা এখনো মাওলানা বাড়ির লোকদের কাছে কৃতজ্ঞ। মাওলানা বাড়ির সবাই তাবলীগ জামাতের সাথে যুক্ত।মাওলানা বাড়ির ছেলে মাওলানা মাহমুদুল হাসান কাকরাইল মসজিদের একজন মুরব্বী।ভারতের দেওবন্দ মাদ্রাসা কেন্দ্রিক যে আলেমদের সংগঠন “জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ” উনারা ও কিন্তু ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধার পক্ষে অনেক গুলি ফতোয়া দিয়েছিলেন।জমিয়তের সকলেই দেওবন্দি আলেম আজ ও বাংলাদেশের রাজনিতীতে সক্রীয় আছেন।
“জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ” ১৯৭১ সালে স্পষ্টভাবে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী যে নির্মম ভাবে পূর্ব পাকিস্তানি জনগণদেরকে হত্যা করছে এই ব্যাপারে অনেকগুলি বিবৃতি দিয়েছিল। এই ফতোয়া গুলি ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত শায়খুল ইসলাম হযরত হোসাইন আহমদ মাদানী রহমাতুল্লাহ আলাইহির যে জীবনী বের হয়েছে সেই বইটির শেষে পরিশিষ্ট আকারে দেয়া হয়েছে। ১৯৭১সালের মুক্তিযুদ্ধে বাংলার হিন্দু মুসলমান সকল ধর্ম মত পেশার লোকেরা অংশ গ্রহন করেছিল। বাংলার আলেম সমাজও এর থেকে দূরে ছিল না। তথাকথিত কিছু ইসলামী দলের কতিপয় ব্যক্তির মুক্তিযুদ্ধের সময় তাদের অপকর্ম কে ভিত্তি করে দয়া করে হক্কপন্থী আলেম উলামাদের কে রাজাকার আলবদর আল শামস বলে গালি দিবেন না। বাংলার আলেম সমাজ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশ নিয়েছেন এতে কোন সন্দেহ নেই।
এখন সময় এসেছে সঠিক ইতিহাস তুলে ধরার।
(তিন) ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের প্রধান মুহাদ্দিস ছিলেন শায়খুল ইসলাম আমীমুল এহসান রহমাতুল্লাহ আলাইহি।আমীমুল এহসান (রহঃ) তিনিও কিন্তু পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে ফতোয়া দিয়েছিলেন হত্যা ওনারী ধর্ষনের বিরুদ্ধে ।পরবর্তীতে ইয়াহিয়া সরকার তাকে জোর করে সৌদিআরব পাঠিয়ে দেয়।দেশ স্বাধীন হবার পর তিনি বাংলাদেশে ফিরলে মরহুম শেখ মুজিবুর রহমান সাহেব তাঁকে ঢাকার বায়তুল মোকাররম মসজিদের  প্রধান খতীব হিসাবে নিযুক্ত করেন।উপমহাদেশে শিয়া মতবাদের বিলুপ্তি সাধনে শায়খুল ইসলাম আমীমুলএহসান রহমাতুল্লাহি আলাইহি এর অনেক অবদান ছিল। [ তথ্যসূত্রঃ শায়খুল ইসলামআমীমুল এহসান রহমাতুল¬াহ আলাইহি এর জীবন ও কর্ম, ইসলামিক ফাউন্ডেষন বাংলাদেশ]
ব্রাক্ষনবাড়িয়া সদরে যে সবচেয়ে বড় ক্বওমী মাদ্রাসা জামিয়া ইউনুসিয়া সেই মাদ্রাসার প্রধান মুহতামিম ফখরে বাঙ্গাল আল্লামা তাজুল ইসলাম রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনিও কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে ফতোয়া দিয়েছিলেন। ব্রাক্ষনবাড়িয়া জেলায় অনেক বড় বড় আলেম তার ফতোয়া শুনে মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিল।অনেক মুক্তিযুদ্ধাকে ফখরে বাঙ্গাল আল্লামা তাজুল ইসলাম (রহঃ) নিজের বাসায় আশ্রয় দিয়েছিলেন। দেশ স্বাধীন হবার পরমরহুম শেখ মুজিবুর রহমান  তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়ে একটি চিঠিও দিয়ে ছিলেন।
(তথ্যসুত্রঃ ফখরে বাঙাল আল্লামা তাজুল ইসলাম রহমাতুল্লাহি আলাইহি ও তার সাথীবর্গ।
লেখকঃ হাফিয মুহাম্মদনুরুজ্জামান, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ)।
ভারতের দেওবন্দ মাদ্রাসা কেন্দ্রিক যে আলেমদের সংগঠন “জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ” তারা ও কিন্তু ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধার পক্ষে অনেক ফতোয়া দিয়েছিলেন।“জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ” ১৯৭১ সালে স্পষ্টভাবে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী যে নির্মম ভাবে পূর্ব পাকিস্তানী জনগণদের কে হত্যা করছে এইব্যাপারে অনেকগুলি বিবৃতি দিয়েছিল। এই ফতোয়া গুলি ইসলামিক ফাউন্ডেশনবাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত শায়খুল ইসলাম হযরত হোসাইন আহমদমাদানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি‘র যে জীবনী বের হয়েছে সেই বইটির শেষে পরিশিষ্ট আকারে দেয়া হয়েছে। বিশিষ্ট গবেষক আলেম ডঃ মুশতাক আহমদ“শায়খুল ইসলাম হযরত হোসাইন আহমদমাদানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ঃ জীবন ও কর্ম” শিরোনামে তথ্য ও তত্ত¡বহুল অভিসন্দর্ভ প্রনয়ন করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের  ইসলামের ইতিহাস বিভাগে থেকে এই অভিসন্দভর্ উপলক্ষ্যে মাওঃ মুশতাক আহমদ কে পি.এইচ.ডি.ডিগ্রী  প্রদান করা হয়েছে। আর ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ ডঃ মুশতাক আহমদকে এই অভিসন্দর্ভ টিই শায়খুল ইসলাম হযরত হোসাইন আহমদ মাদানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি‘র জীবনী বই আকারে বের করেছে।
(চার) বর্তমানে বাংলাদেশে একটা ফ্যাশনে পরিনত হয়েছে যে, ইসলাম নিয়ে যারা রাজনীতি করে ইসলাম নিয়ে যারা লেখালেখি করে,যারা প্রিয় নবীর সুন্নাত কে ধারন কওে চলা ফেরা করে, তাদের কে জঙ্গি বা রাজাকার হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়।এ কথাটা যেমন সত্য ঠিক তেমনি এই কথাটাও সত্য যে, আমাদের ক্বওমী মাদ্রাসার আলেমরা স্পষ্টভাবে সেই সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্যাতনের বিরুদ্ধে ফতোয়া দিয়ে যুদ্ধ করেছিলেন। তারা শুধু ফতোয়াই দেননি অনেক কওমি মাদ্রাসার ছাত্রদের কে মুক্তিযুদ্ধেও পাঠিয়ে ছিলেন। তাই তথাকথিত বুদ্ধিজীবিদের প্রতি অনুরোধ থাকবে, দয়া করে হক্কানী আলেমদেরকে রাজাকার আল বদর বলে গালি দিবেননা।তিরস্কার করবেননা। যত বড় মুক্তিযোদ্ধাই আসুক দেওবন্দভিত্তিক কোন কওমি মাদ্রাসার আলেমকে রাজাকার হিসাবে প্রমান করতে পারবে না ইনশা আল্লাহ।যেহেতু স্বাধীনতা যুদ্ধে উলামায়ে কেরাম ছিলেন মুক্তিকামী মানুষের সিপাহসালার। বাংলাদেশের বিখ্যাত আলেম ও বুযুর্গ মাওলানা মোহাম্মদল্লাহ হাফেজ্জি হুজুর (রাহ.) সে সময় স্পষ্ট ভাষায় বলেছিলেন, ‘এ যুদ্ধ ইসলাম আর কুফরের যুদ্ধ নয়, এটা হলো জালেম আর মজলুমের যুদ্ধ। পাকিস্তানিরা জালেম, এদেশের বাঙালিরা মজলুম। তাই সামর্থ অনুযায়ী সকলকেই মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করতে হবে এবং এটাকে প্রধান কর্তব্য বলে মনে করতে হবে।
এ দেশের শ্রেষ্ঠ বুজুর্গ, ফেদায়ে মিল্লাত আল্লামা হযরত হোসাইন আহমদ মাদানী (রাহ.)-এর বিশিষ্ট খলিফা, আধ্যাত্মিক রাহবার আল্লামা লুৎফর রহমান বর্ণভী ছিলেন একজন দূরদর্শী সিপাহসালার। তিনি তখন পাকিস্তানের পক্ষ অবলম্বন না করে মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন করেছিলেন এবং বিপদগ্রস্থ বাঙালি মানুষদের সাহায্য-সহযোগিতা করেছিলেন। তৎকালীন সময়ে একবার তিনি আল্লাম আশরাফ আলী ধর্মপুরী (রাহ.)কে বলেছিলেন আমি সূর্যের মতো স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি যে, কয়েক দিনের ভেতরেই এদেশ স্বাধীন হয়ে যাবে এবং পাকিস্তানি হানাদারের জুলুমের কবল থেকে এ দেশের জনগণ মুক্তি লাভ করবে।
আড়াইহাজার থানার কমান্ডার মরহুম শামসুল হকের অধীনে আল্লামা এমদাদুল হক আড়াইহাজারী (রাহ.) মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন করেছিলেন। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে যখন আমি লালবাগ মাদরাসার ছাত্র তখন মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে গেল। যুদ্ধ শুরু হলে আমার মাদরাসা বন্ধ হয়ে যায়। তখন আমি হাফেজি হুজুর (রাহ.)কে প্রশ্ন করলাম, হুজুর এ যুদ্ধে আমাদের ভূমিকা বা কর্তব্য কি থাকবে ? তখন হুজুর আমাকে বললেন পাকিস্তানি জালিম হানাদার বাহিনীর জুলুম থেকে এ দেশের মানুষকে রক্ষা করা অবশ্যই তোমার আমার সকলের কর্তব্য। তাই বসে থাকার আর সময় নেই, জালিমদের কবল থেকে মজলুমদের বাঁচানোর জন্য মুক্তিযুদ্ধে অংশ  গ্রহন কর। এ দেশের নিরীহ জনগণকে সহযোগিতা করা আমাদের ঈমানী দায়িত্ব।
আর সেই সময় হাফেজি হুজুর (রাহ.) বলেছিলেন, ‘হুব্বুল ওয়াতান মিনাল ঈমান’ অর্থাৎ ‘দেশ প্রেম ঈমানেরে অঙ্গ’। তার এ কথার উত্তর শুনে আমি বেশ অনুপ্রাণিত হয়ে আমিও মুক্তিযুদ্ধে শরিক হয়ে গেলাম।
(পাঁচ) হযরত মাওলানা মুফতি মাহমুদ (রাহ.) ও বাঙালি মুসলমানদের পক্ষে ছিল। তার বক্তব্য ছিল বাঙালিদের পক্ষে। মাওলানা আব্দুস সালাম তিনি বলেন, ‘৭১ সালে আমি করাচি ইউসুফ বিন নুরী মাদরাসার ছাত্র। একদিন মুফতি মাহমুদ সাহেব মাদরাসায় এলে তাকে এক নেতা শেখ মুজিব সম্পর্কে বলেছিল শেখ মুজিব গাদ্দারকে  গ্রেপ্তার করে আনা হয়েছে। তাকে এখনই হত্যা করা হবে তখন মুফতি সাহেব হুজর রাগান্বিত হয়ে বলেছিলেন, শেখ মুজিব গাদ্দার নন; তিনি একজন দেশ প্রেমিক মুসলমান।
মুফতি মাহমুদ (রা.) ১৩ মার্চ এক বক্তব্যে পরিষ্কার ভাষায় পাকিস্তানের ইয়াহিয়া খানের নীতিকে ভুল আখ্যা দিয়ে শেখ মুজিবের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহŸান জানান। ইতিহাস অনুসন্ধান করতে গিয়ে জানা যায় যে, স্বাধীনতা সংগ্রামে সংগঠক হিসেবে এবং এদেশের মানুষকে মুক্তিযুদ্ধে উৎসাহ ও সহযোগিতায় আলেম সমাজের ও ভূমিকা আছে। কারণ সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ করেছেন অসংখ্য কওমী মাদ্রাসার ওলামায়ে কেরাম ও পীর-মাশায়েখগণ। তাদের মাধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজন হলেন, আল্লামা হাফেজি হুজুর (রাহ.), আল্লামা আসয়াদ মাদানী (রাহ.), আল্লামা লুৎফুর রহমান বরণী (রা.), চরমোনাইর পীর আল্লামা ফজলুল করীম রাহ, আল্লামা কাজী মু’তাসিম বিল্লাহ, আল্লামা মুফতি নুরুল্লাাহ (রাহ.) আল্লামা এমদাদুল হক আড়াইহাজারী (রাহ.), আল্লামা শামসুদ্দিন কাসেমী (রাহ.) আল্লামা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ দা. বা, প্রমুখ।
(ছয়) স্বাধীনতা সংগ্রামে আরেক অবিসাংবাদিত মুসলিম নেতা বিশ্বের প্রখ্যাত আলেম আওলাদে রাসুল সাইয়্যেদ আসয়াদ আল মাদানী (রা.)-এর ভূমিকা অবিস্মরণীয়। যখন পাকিস্তানি বাহিনী এ দেশের নিরীহ মানুষের ওপর বর্বোরোচিত হামলা চালালো তাৎক্ষণিক তিনি পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে তীব্র  নিন্দা ও  প্রতিবাদ জানালেন এবং নিরীহ বাঙালিদের পক্ষে জোরালো বক্তব্য রাখলেন। স্বাধীনতা সংগ্রামে ওলামায়ে কেরামদের ভূমিকা তথা অবদান দেখে তৎকালিন মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার মেজর আবদুল জলিল হযরত হাফেজ্জি হুজুর (রাহ.)-এর হাতে বাইয়াত তথা মুরিদ হয়ে গেলেন। তিনি বাইয়াত হওয়ার পর তাকে তার ভক্তও শীষ্যরা  প্রশ্ন করল আপনি একজন মুক্তিযোদ্ধা হয়ে কিভাবে হাফেজি হুজুরের মতো রাজাকার এক ব্যক্তির কাছে মুরিদ হলেন, জবাবে তিনি বলেছিলেন, ‘হযরত হাফেজ্জি হুজুর (রাহ.) কোনো রাজাকার নন, তিনি শ্রেষ্ট আলেম এবং সত্যিকার একজন দেশপ্রেমিক। উপরোক্ত আলোচনা থেকে সুস্পষ্ট হলো মুক্তিযুদ্ধে আলেম সমাজের ভূমিকা ছিল অপরিসীম। তারা মুক্তিযুদ্ধে মুক্তিকামী মানুষের সিপাহসালার হয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
(সাত) আমরা যারা বাংলাদেশে বাস করছি, তারা সকলেই জানি, বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল ১৯৭১সালে। এর আগে এ দেশ পাকিস্তানের অন্তর্ভূক্ত ছিল।আর পাকিস্তান স্বাধীনতা অর্জন করেছিল ১৯৪৭ সালে ।১৯৪৭ সালের আগ পর্যন্ত এইদেশ গুলোর স্বতন্ত্র কোনো নাম ছিল না। সমষ্টিগত নাম ছিল-মহাভারত।
১৯৪৭ সালের পূবে প্রায় ২০০ দুইশত বছর মহাভারত শাসন করেছিল ইংরেজরা। ইংরেজদের শাসনামলের আগে,মহাভারতের শাসন ক্ষমতা ছিল মুসলমানদের হাতে ।
ইংরেজদের শাসনআমলে তখন ইংরেজদের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে, তৎকালীন উপ-মহাদেশের সবচেয়ে বড় আলেম, আল্লামা শাহ্ ওয়ালিউল্লাহ্ মুহাদ্দিসে দেহলবী (রহ) এর বড় সাহেবজাদা আল্লামা শাহ্ আব্দুল আযীয মুহাদ্দিসে দেহলবী (রহ.) ১৮০৩ সালে ইংরেজদের বিরুদ্ধে জালিম বলে ফতোয়া দিলেন।এই দেওবন্দি আলেমদের একটি ফতোয়া “ভারত বর্ষ দারুল হারব” হয়ে গেছে ইংরেজদের বিরুদ্ধে জেহাদ করা ফরজ” একইসাথে  ইংরেজদের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণাও দেন।এই ঘোষণা বা ফতোয়ার ভিত্তিতে, ভারত বর্ষে সকল মুসলমান, স্বাধীনতা আন্দোলনে প্রাণ-পণে ঝাঁপিয়ে পড়ে। যার ফলে শেষ পর্যন্ত হাজার হাজার মুসলমান তথা-আলেমদের রক্তের বিনিময়ে ইংরেজদের হাত থেকে ভারত স্বাধীনতা লাভ করে। যার কারনে ইংরেজ বিতাড়িত হয় এবং ভারতবর্ষ স্বাধীন হয়। ভারতবর্ষ ইংরেজ মুক্ত হতে পেরেছে বলেই পাকিস্তান এবং তার পর বাংলাদেশ স্বাধীন হতে পেরেছে। পাঠক সমাজ,এর দ্বারা  সহজেই বুঝতে পেরেছেন যে, ভারত উপ-মহাদেশ স্বাধীনতা আন্দোলনে আলেম-ওলামাদের কতখানি অবদান ছিল।
(আট)  এখানে আরেকটু স্পষ্ট করে বলতে চাই যে,ভারত স্বাধীন হওয়ায় পাকিস্তান স্বাধীন হয়েছে এবং পাকিস্তান স্বাধীন হওয়ায় বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। তাহলে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়া  নির্ভর করে পাকিস্তান স্বাধীন হওয়ার উপর। পাকিস্তান স্বাধীন হওয়া নির্ভর করে ভারত স্বাধীন হওয়ার উপর এবং ভারত স্বাধীন হওয়া নির্ভর করে আল্লামা শাহ্ আব্দুল আযীয মুহাদ্দিসে দেহলবী (রহ). এর ঘোষণা বা ফতোয়ার উপর। এক আধ্যাত্বিক মহা-পুরুষ আল্লামা শাহ্ আব্দুল আযীয মুহাদ্দিসে দেহলবী (রহ) এর ফতোয়ার উপর ভিত্তি করে। আজ ভারত পাকিস্তান ও বাংলাদেশ স্বাধীন হল। অথচ,স্বাধীনতার ইতিহাসের পাতায় ওলামায়ে কেরামের কোনো নাম ও নেই। আর যারা আজ কে মুক্তিযোদ্ধা বলে চিৎকার করছেন, জিজ্ঞাসা করলে জানা যাবে যে, এদের অধিকাংশই মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাসও জানেনা। আজ অনেকে উলামায়ে কেরামের এই অসামান্য অবদানকে স্বীকার করতে লজ্জাবোধ করে।
(নয়) এবার আসা যাক আমাদের বাংলাদেশ নামক এ ভূখন্ডের সেই ১৯৭১ এ রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা যুদ্ধে এ দেশের আলেম সমাজের কি ভূমিকা ছিল ?এই স্বাধীনতা যুদ্ধে  সাধারন জনগনের স্বঃপুত অংশ গ্রহন  যেমন ছিল ,তেমনি আলেম ওলামাদের অংশ গ্রহনের কথাও অস্বীকার করার কোন অবকাশ নেই । বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক আবহাওয়া এমন যে, কোন আলেম মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন,এ রকম কোন সংবাদ শোনার জন্য আমাদের তথাকথিত সুশিল সমাজ রাজি নন। একটি স্বার্থান্বেষী মহল রাজনৈতিক স্বার্থে ইসলাম এবং ইসলামের সাথে সম্পর্কিত সকল কিছুর গায়ে স্বাধীনতা বিরোধীর  লেবেল দেয়ার চেষ্টা করছে। স্বাধীনতা যুদ্ধে  ওলামায়ে কেরামের অংশ গ্রহনকে খাটো করে দেখা হচ্ছে। ইতিহাসের পাতা থেকে ওলামাদের অবদানকে মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র চলছে।  যার কারণে আমরা ভুলে যেতে বসেছি যে, আমাদের মুক্তিযুদ্ধে অন্যান্য পেশার লোকদের পাশাপাশি বহু ওলামায়ে কেরামগন যে  অংশ নিয়েছেন। তাদের অনেকে রণাঙ্গনে প্রত্যক্ষভাবে যুদ্ধ করেছেন এবং অনেকে সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের সাথে দেশের অভ্যান্তরে থেকে মুক্তিযুদ্ধে সহায়তা করেছেন। যদি তাই হয় তাদের অবদানের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করা হবে। মুক্তিযুদ্ধে উলামায়ে কেরামদের অবদান অনস্বীকার্য। যদিও কেউ কেউ  তৎকালীন রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের কারনে এর বিরোধীতাও করেছিল, তাই বলে কি আজকে যাদের জন্মই হয়নি সেই সময়, শুধুমাত্র  ধর্মীয় লেবাসের কারনে তাদের কে রাজাকার বলে উপহাস করা হবে এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।
লেখক পরিচিতি: আলহাজ¦ মুহাম্ম তাহের নঈম
সম্পাদক টেকনাফ নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম, সহ সম্পাদ দৈনিক কক্সবাজার৭১
উপ পরিচালক দারুল ইরফান মুহিউচ্ছুন্নাহ মাদরাসা,উনছিপ্রাং, হোয়াইক্যং,টেকনাফ।

শেয়ার করতে পারেন খবরটি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো বিভিন্ন খবর দেখুন

Sidebar Ads

ডাঃ কবীর উদ্দিন আহমদ

© All rights reserved © 2015 Dainik Cox's Bazar Ekattor
Theme Customized By MonsuR